শার্শায় সমাধিস্থ বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখের ৫৪তম শাহাদাতবার্ষিকী আজ

ফোরকান জামান,শার্শা(যশোর)প্রতিনিধি:
শার্শায় সমাধিস্থ বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখের ৫৪তম শাহাদাতবার্ষিকী আজ ছবি: খবরপত্র
শার্শায় সমাধিস্থ বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখের ৫৪তম শাহাদাতবার্ষিকী আজ ছবি: খবরপত্র

আজ ৫ সেপ্টেম্বর, জাতির গৌরবময় সন্তান, মহান মুক্তিযুদ্ধের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ল্যান্স নায়েক নূর মোহাম্মদ শেখের ৫৪তম শাহাদাতবার্ষিকী। ১৯৭১ সালের এ দিনে যশোরের চৌগাছার ছুটিপুর যুদ্ধে অকুতোভয় সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে সহযোদ্ধাদের জীবন রক্ষার্থে নিজের জীবন উৎসর্গ করেন তিনি। তাঁর নিথর দেহ উদ্ধার করে সমাহিত করা হয় যশোরের শার্শা উপজেলার কাশিপুর গ্রামের ডিহি এলাকায়।

শার্শার বুকে নূর মোহাম্মদের সমাধি আজো মুক্তিকামী মানুষের কাছে চিরন্তন শ্রদ্ধার স্থান। প্রতি বছর হাজারো মানুষ সেখানে উপস্থিত হয়ে শ্রদ্ধা জানায় এই মহান মুক্তিযোদ্ধাকে। সমাধিস্থলটি শুধু শার্শাবাসীর জন্য নয়, পুরো জাতির কাছে এক গৌরবের প্রতীক।

১৯৩৬ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি নড়াইল জেলার মহেশখালী গ্রামে জন্ম নেন নূর মোহাম্মদ। শৈশবে পিতামাতা হারিয়ে কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়েই বেড়ে ওঠেন তিনি। সংসার ও জীবিকার তাগিদে ১৯৫৯ সালে ইপিআরে যোগ দেন। পরবর্তীতে ১৯৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধে অংশ নেন সাহসিকতার সঙ্গে। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে যশোর অঞ্চলে ৪নং ইপিআর উইংয়ের অধীনে পাকিস্তানি সেনাদের বিরুদ্ধে সম্মুখযুদ্ধে অংশ নেন তিনি।

১৯৭১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর চৌগাছার ছুটিপুর যুদ্ধে পাকবাহিনীর প্রচণ্ড আক্রমণের মুখে মারাত্মকভাবে আহত হয়েও সহযোদ্ধাদের নিরাপদে সরিয়ে নিতে অনড় সিদ্ধান্ত নেন নূর মোহাম্মদ। মৃত্যুপূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত তিনি শত্রুর ওপর গুলি চালিয়ে যান, সহযোদ্ধাদের বাঁচিয়ে যান। অবশেষে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে অচেতন হয়ে পড়লে পাক সেনারা নৃশংসভাবে তাঁকে হত্যা করে। পরবর্তীতে মুক্তিযোদ্ধারা তাঁর ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করে শার্শার কাশিপুরে সমাহিত করেন।

তাঁর অসামান্য বীরত্ব ও আত্মত্যাগের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার তাঁকে দেশের সর্বোচ্চ সামরিক সম্মাননা ‘বীরশ্রেষ্ঠ’ খেতাবে ভূষিত করে।

শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে আজ সকাল ১১টা ৩০ মিনিটে শার্শা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাঁর সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখ শুধু শার্শা নয়, সমগ্র জাতির কাছে অনুপ্রেরণার এক অম্লান প্রতীক হয়ে আছেন। তাঁর বীরত্ব, দেশপ্রেম ও আত্মত্যাগ প্রজন্ম থেকে প্রজন্মকে জাগ্রত করে যাবে।

 

 

 

এলাকার খবর

সম্পর্কিত