গুগল-হোয়াটসঅ্যাপের বিকল্প খুঁজছে ভারত

সংবাদপত্র ডেস্ক
গুগল-হোয়াটসঅ্যাপের বিকল্প খুঁজছে ভারত ছবি: সংগৃহীত
গুগল-হোয়াটসঅ্যাপের বিকল্প খুঁজছে ভারত ছবি: সংগৃহীত

ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যিক সম্পর্ক এখন টানাপোড়েনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। আমেরিকার আরোপিত ৫০ শতাংশ শুল্কের জবাবে ভারত এবার জোর দিচ্ছে “মেড ইন ইন্ডিয়া” উদ্যোগে। আর এ উদ্যোগের নেতৃত্বে আছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর তিন মন্ত্রী।

তারা এবার প্রকাশ্যে গুগল, মাইক্রোসফট ও হোয়াটসঅ্যাপের মতো মার্কিন অ্যাপের বিকল্প দেশীয় অ্যাপ ব্যবহারে উৎসাহ দিচ্ছেন।

আইসিটি মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব সম্প্রতি মহাসড়ক প্রকল্পের একটি উপস্থাপনা সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন। সেখানে তিনি জানান, উপস্থাপনাটি তৈরি করা হয়েছে জোহো সফটওয়্যারের মাধ্যমে- যা মাইক্রোসফট পাওয়ারপয়েন্টের দেশীয় প্রতিদ্বন্দ্বী।

এমনকি মানচিত্রও ব্যবহার করা হয়েছে “ম্যাপ মাই ইন্ডিয়া”-র, গুগল ম্যাপস নয়।

তিনি গত সপ্তাহে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স (সাবেক টুইটার)- এ জোহো সফটওয়্যার পরীক্ষার একটি ভিডিও পোস্ট করেন এবং দেশীয় সফটওয়্যার ব্যবহারের আহ্বান জানান। ভিডিওটি ইতোমধ্যেই ৬২ লাখবার দেখা হয়েছে।

একইসঙ্গে আলোচনায় এসেছে আরেক দেশীয় মেসেজিং অ্যাপ- আরাট্টাই। দক্ষিণ ভারতের ভাষায় যার অর্থ “আড্ডা”।

দেশীয় মেসেজিং অ্যাপ আরাট্টাই জনপ্রিয় করে তুলতে এগিয়ে এসেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়াল এবং শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান। গয়াল লিখেছেন, “খুব গর্বের সঙ্গে আমি এখন আরাট্টাই ব্যবহার করছি, একটি মেইড ইন ইন্ডিয়া প্ল্যাটফর্ম যা ভারতকে আরও কাছে আনে।” অ্যাপটি সেপ্টেম্বর মাসে ৪ লাখের বেশি বার ডাউনলোড হয়েছে, যা আগস্টে ছিল মাত্র ১০ হাজারের কম।

বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়াল ও শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান সরাসরি এই অ্যাপ ব্যবহার করে লিখেছেন- “গর্বের সঙ্গে বলছি, আমি এখন আরাট্টাই ব্যবহার করছি। এটি ভারতকে আরও কাছে আনে।”

ফলাফল? আগস্টে যেখানে ডাউনলোড ছিল মাত্র ১০ হাজারের নিচে, সেখানে সেপ্টেম্বরেই বেড়ে দাঁড়ায় ৪ লাখের বেশি। প্রতিদিন সক্রিয় ব্যবহারকারী সংখ্যা ছাড়ায় এক লাখ।

তবে চ্যালেঞ্জও কম নয়। হোয়াটসঅ্যাপ ভারতের সবচেয়ে বড় বাজার- ব্যবহারকারী ৫০ কোটির বেশি। গুগল ম্যাপস ও মাইক্রোসফটের সফটওয়্যারও সরকারি-বেসরকারি কাজে গভীরভাবে প্রতিষ্ঠিত।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, “শুধু সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা যথেষ্ট নয়। জোহোর মতো প্রতিষ্ঠানকে টিকে থাকতে হলে চাই আলাদা বৈশিষ্ট্য, বড় বিনিয়োগ আর শক্তিশালী নিরাপত্তা।”

ভারতের এই দেশীয় উদ্যোগ নতুন কিছু নয়। ২০২১ সালে “কু” নামের দেশীয় সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপও জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। কিন্তু অর্থসংকটে তা টিকতে পারেনি।

প্রশ্ন রয়ে গেছে- এবার কি সত্যিই ভারতীয় অ্যাপগুলো বিশ্বজুড়ে নিজেদের জায়গা করে নিতে পারবে? নাকি আবারও হার মানতে হবে বহুজাতিক জায়ান্টদের কাছে?

এলাকার খবর

সম্পর্কিত