স্কুল ফিডিং প্রোগ্রামে ডিম যুক্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। তিনি বলেন, বর্তমানে স্কুল ফিডিংয়ে দুধ দেওয়া হলেও সেখানে ডিম সংযোজন করা প্রয়োজন। কারণ দেশের অনেক দরিদ্র শিশু যথাযথ পুষ্টি পায় না, ফলে স্কুলের খাবার তালিকায় ডিম যুক্ত করা হলে তা অপুষ্টি দূরীকরণে বড় ভূমিকা রাখতে পারে।
শুক্রবার (১০ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর ফার্মগেটের কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (কেআইবি) মিলনায়তনে বিশ্ব ডিম দিবস উপলক্ষে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর, পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল ও ওয়ার্ল্ড পোল্ট্রি সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশন (বাংলাদেশ শাখা) আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, ডিম এমন এক খাবার যা দেশের প্রায় সব শ্রেণির মানুষের জীবনের সঙ্গে জড়িত। এর উৎপাদন থেকে শুরু করে ভোগ পর্যন্ত প্রতিটি স্তরেই মানুষের অংশগ্রহণ রয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন, “গরুর মাংস সবার নাগালের বাইরে হলেও ডিম এমন একটি সাশ্রয়ী খাদ্য যা সকলের নাগালে।”
তিনি বলেন, শিশুর পুষ্টি নিশ্চিত করতে ছয় বছর বয়সের মধ্যেই প্রয়োজনীয় খাদ্য গ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই স্কুল ফিডিং প্রোগ্রামে ডিম যুক্ত করা সময়ের দাবি। উপদেষ্টা আরও জানান, দেশের ৮০ শতাংশ ডিম আসে প্রান্তিক খামারিদের কাছ থেকে, যেখানে গ্রামীণ নারীরা মুরগি পালন করে পরিবারের পাশাপাশি স্থানীয় পর্যায়ে পুষ্টি সরবরাহেও অবদান রাখছেন।
কৃষিতে অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহারে মুরগি পালন হুমকির মুখে পড়েছে বলেও উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি। পাশাপাশি হাওড় অঞ্চলের হাঁসের ডিমের বিষয়ে প্রচার বাড়ানোর আহ্বান জানান।
পুষ্টি প্রসঙ্গে ফরিদা আখতার বলেন, “আমাদের পূর্ণাঙ্গ খাবার সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে হবে। শুধু ডিম নয়, মাছ, মাংস ও সবজির গুরুত্বও জানাতে হবে। বর্তমানে ক্যান্সার বাড়ছে, বিশেষ করে নারীদের মধ্যে। ডিম খেলে ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে—এই বার্তাটি ব্যাপকভাবে প্রচার করতে হবে।”
ডিমের বাজার পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, “মৌসুমভেদে ডিমের দাম ওঠানামা করে, কিন্তু অনেক সময় অপ্রয়োজনে মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণে দাম বেড়ে যায়। তাই ডিমের বাজার নিয়মিত পর্যবেক্ষণ ও রিপোর্টিং জোরদার করতে হবে।” তিনি আরও বলেন, “ডিমের দাম বৃদ্ধি নিয়ে যেকোনো অনিয়ম বা অসাধু কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
অনুষ্ঠানে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবু সুফিয়ানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. শাকিলা ফারুক এবং ওয়াপসা বিবির সাবেক সভাপতি মসিউর রহমান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ইলিয়াস হোসেন ও অধ্যাপক ড. মাহমুদুল হাসান সিকদার।