বর্তমানে বাংলাদেশে মৌসুমি ভাইরাল জ্বরের প্রকোপ দেখা যাচ্ছে। আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে এই ধরনের জ্বর দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। ঠাণ্ডা-গরম আবহাওয়া এবং বিভিন্ন ভাইরাসের সংক্রমণ (যেমন ইনফ্লুয়েঞ্জা, অ্যাডেনোভাইরাস, ডেঙ্গু) এর প্রধান কারণ। অনেকেই ভেজা কাপড় পরা বা ঠাণ্ডা পানি পানের কারণেও আক্রান্ত হচ্ছেন।
ভাইরাল জ্বরের সাধারণ লক্ষণ
এই জ্বরের সাধারণ লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে:
* শরীর ম্যাজম্যাজে বা দুর্বল লাগা: ক্লান্তি এবং অবসাদ অনুভব করা।
* হালকা জ্বর বা তাপমাত্রা ওঠানামা করা: শরীরের তাপমাত্রা খুব বেশি না হলেও তা ওঠানামা করতে পারে।
* নাক বন্ধ বা পানি পড়া: সর্দি এবং নাক দিয়ে পানি পড়ার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।
* মাথাব্যথা: হালকা থেকে মাঝারি ধরনের মাথাব্যথা অনুভব করা।
* গলা ব্যথা বা শুকনো কাশি: গলা খুসখুস করা বা শুকনো কাশি হওয়া।
* হালকা গা ব্যথা: শরীরের বিভিন্ন অংশে হালকা ব্যথা অনুভব করা।
দ্রুত সুস্থ হতে যা করবেন
ভাইরাল জ্বর থেকে দ্রুত সুস্থ হতে কিছু বিষয় মেনে চলা জরুরি:
১. পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন: শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে ভাইরাস দমনে সহায়তা করার জন্য বিশ্রাম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
২. পর্যাপ্ত পানি পান করুন: হালকা গরম পানি, স্যালাইন বা স্যুপ পান করে শরীরকে পানিশূন্যতা থেকে রক্ষা করুন। এটি জ্বর কমাতেও সাহায্য করবে।
৩. হালকা খাবার গ্রহণ করুন: ডাল-ভাত, খিচুড়ি, ফলমূলের মতো সহজপাচ্য ও পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
৪. প্যারাসিটামল ব্যবহার করুন: জ্বর বেশি থাকলে বা শরীর ব্যথা করলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী প্যারাসিটামল (সাধারণত ৫০০ মিলিগ্রাম বা ৬৫০ মিলিগ্রাম) সেবন করতে পারেন।
৫. গরম পানির ভাপ নিন: নাক বন্ধ থাকলে বা গলা ব্যথা হলে গরম পানির ভাপ নিলে আরাম পাওয়া যায়।
৬. ঠাণ্ডা থেকে সতর্ক থাকুন: ভেজা কাপড় পরা এড়িয়ে চলুন, সরাসরি ফ্যান বা এসির নিচে বসা থেকে বিরত থাকুন এবং রাতে হালকা চাদর ব্যবহার করুন।
৭. অ্যান্টিবায়োটিক পরিহার করুন: এটি ভাইরাসজনিত জ্বর, তাই অ্যান্টিবায়োটিক সেবনে কোনো লাভ হবে না। অ্যান্টিবায়োটিক কেবল ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগের চিকিৎসায় কার্যকর। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক খাবেন না।
কখন ডাক্তার দেখাবেন?
কিছু ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি:
* জ্বর ৩ দিনের বেশি স্থায়ী হলে।
* শরীরের তাপমাত্রা ১০১°F-এর বেশি হলে।
* গলা বা কাশির সমস্যা বাড়তে থাকলে।
* ছোট বাচ্চা বা বয়স্কদের ক্ষেত্রে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
এই সময়ে সুস্থ থাকতে সচেতনতা ও সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি।