নিজস্ব প্রতিনিধিঃ বাকেরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নার্সদের করোনাকালীন ফাইজার টিকা প্রদানে ১৪ টি ইউনিয়নে মাঠ পর্যায়ে কর্মরত নার্সদের ভাতা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শংকর প্রসাদ অধিকারীর ও নার্স সুপারভাইজার সালমা বেগমের বিরুদ্ধে।জানা যায়,জীবনের ঝুঁকি নিয়ে করোনা রোগীদের সেবায় যেসব নার্স এগিয়ে এসেছিলেন তাদের অনেকেই নিজেদেরকে বঞ্চিত মনে করছেন।সরকারের দেয়া করনাকালীন নার্সদের ভাতা সঠিক ভাবে পায়নি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কোভিড ইউনিটে দায়িত্ব পালনকারী নার্স ও ফাইজার টিকা করোনা ভ্যাকসিন মাঠ পর্যায়ে প্রদানের দায়িত্বে থাকা নার্সরা।অথচ সরকারি ভাবে মাঠ পর্যায়ে টিকা প্রদান কারি ৭ জন নার্সকে গত পহেলা সেপ্টেম্বর তাদের নিজস্ব ব্যাংক একাউন্টে ২ লক্ষ ৫ হাজার টাকা প্রদান করেছে।
অথচ নার্স সুপারভাইজার সালমা আক্তার ও কর্মকর্তা ডা.শংকর কুমার প্রসাদ অধিকারী ঐ ভাতার টাকা যাহাদের ব্যাংক একাউন্টে এসেছে তাদের মাধ্যমে টাকা উত্তরণ করে গত ১০ সেপ্টেম্বর নার্স সুপারভাইজার সালমা আক্তারের কাছে জমা রাখেন।ওই টাকা আত্মসাৎ এর পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে দীর্ঘদিন পর গত ২৭ অক্টোবর (শনিবার) বিকেলে সুপারভাইজার সালমার অফিস কক্ষে ফাইজার ও করোনা টিকা কার্যক্রমে জড়িত না থাকা নার্স ও স্টাফদের ৩২ জনের একটি তালিকা দেখিয়ে ওই টাকা বন্টন করেন।এমন ঘটনায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নার্সদের মাঝে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।ইউনিয়ন পর্যায়ে করোনা টিকা প্রদান কার্যক্রমে থাকা কয়েকজন নার্সদের সাথে কথা হলে জানান,ছোট ছোট ছেলে মেয়ে বাসায় রেখে বিভিন্ন ইউনিয়নের দূরদূরান্তে করোনাটিকা প্রদান করেছি।নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দায়িত্ব পালন করেছি।কিন্তু সরকার আমাদের পরিশ্রমের মূল্যায়ন করলেও কর্মকর্তা ও নার্স সুপারভাইজারের স্বেচ্ছাচারিতায় আমরা অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছি।চাকরির ভয়ে অনেকেই মুখ খেলছে না।তাই আমাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের টাকা তাদের হাতে তুলে দিয়েছি।তাহারা নিজেদের ইচ্ছেমতো ওই টাকা বন্টন করেছে।
এছাড়াও উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শংকর প্রসাদ অধিকারীর বিরুদ্ধে পাহাড় সমান অভিযোগ রয়েছে।করোনাকালীন সময়ে উপজেলার ৮৪টি সাব-ব্লক মাঠকর্মী ও স্বেচ্ছাসেবকের জন্য ৮ লাখ ৮২ হাজার টাকা ভাতা বাবদ সরকারি বরাদ্দ আসে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।সেখানেও মাঠকর্মীদের বরাদ্দের টাকার ২৫ শতাংশ কর্তন করে মাঠকর্মীদের মধ্যে বণ্টন করেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শংকর প্রসাদ অধিকারী।কর্মকর্তা ডা. শংকর প্রসাদ একের পর এক দুর্নীতি করে গেলেও চাকরির ভয়ে তার বিরুদ্ধে কথা বলতে পারছে না কেউ।মেডিকেলে কর্মরত ভুক্তভোগীরা জানান,লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করলেও যেন দেখার কেউ নেই।এ টাকা আত্মসাতের বিচার হওয়া উচিত।এ বিষয়ে জানতে চাইলে,উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.শংকর প্রসাদ অধিকারী সাংবাদিকদের জানান,৭ জন নার্সের নিজস্ব ব্যাংক একাউন্টে যে টাকা আসছে সেটা তাদের।আমি কাউকে ওই টাকা ব্যাংক থেকে তুলে সবার মাঝে বন্টন করতে বলিনি। তবে এ বিষয়ে ভাল বলতে পারবেন ইপিআই টেকনোলেজিস্ট হাসান মোরশেদ।
অপরদিকে এ বিষয়ে জানতে চাইলে,নার্স সুপারভাইজার সালমা বেগম সাংবাদিকদের জানান,উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.শংকর প্রসাদ অধিকারীর নির্দেশেই ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নার্স স্টাফ সহ ৩২ জনের একটি তালিকা করে তাদের টাকা দেয়া হয়েছে। তালিক চাইলে তিনি তালিকা দিতে অপরাগত প্রকাশ করেন।এমন ঘটনায় কর্তা ও নার্স সুপারভাইজার একে অন্যের উপর দোষ চাপিয়ে দেয়ার বক্তব্যে সুস্পষ্ট প্রমাণ মিলে টাকা আত্মসাৎ এর বিষয়।আত্মসাৎতের বিষয়ে জানতে চাইলে ইপিআই টেকনোলেজিস্ট হাসান মোরশেদকে একাধিকবার ফোন করেও তাকে পাওয়া যায়নি।এ বিষয়ে নার্সিং অধিদপ্তরের(উপসচিব) মো: নাসির উদ্দিন জানান,সরকার নার্সদের জন্য যে করোনা ভাতা তাদের ব্যাংক একাউন্টে দিয়েছে সেই টাকা শুধুই তাদের।যদি কেউ ওই টাকা আত্মসাৎ করে থাকে আমরা লিখিত অভিযোগ পেলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
Authorized ।। mizanur rahman