ডেস্ক রিপোর্টঃ দিনমজুর পিতামাতার একমাত্র কন্যা সন্তান মীম । চলতি বছরের শুরুতে গ্রামের বাড়ি থেকে গাজীপুরের ভাড়া বাসাতে উঠে পড়াশোনার জন্য। কলেজ পড়ুয়া ভাইয়ের সহযোগিতায় ভর্তি হয় ‘গাছা উচ্চ বিদ্যালয়’র সপ্তম শ্রেণীতে। করোনা নিয়ন্ত্রিত সময়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্লাস সংখ্যা সীমিত রাখার ঘোষণা আসায় সহপাঠীদের সাথে ভালো বন্ধুত্ব হয়ে উঠেনি তের বছরের মীম আক্তারের। গণিতের শিক্ষক পরিচয় দ্বারী লাইব্রেরিয়ান মো.মিল্লাদের কাছে সহপাঠীদের সহযোগিতায় অংকের কোচিংয়ে ভর্তি হয়ে সকলের সাথে পরিচিত এবং পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন কিশোরী মীম।
কিন্তু লম্পট লাইব্রেরিয়ান মিল্লাদ সবে মাত্র শহরের বাতাসে পা রাখা দিনমজুর পিতামাতার কন্যা সন্তান মীমের দিকে কু-নজর দিয়ে বসেন। কোচিং চলাকালীন সময়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে নোংরা ভাবে স্পর্শ করে প্রথমে কিশোরী মেয়েটির প্রতিবাদের ভাষা বুঝার চেষ্টা করেন মিল্লাদ। অবুঝ মীম শিক্ষকের নোংরা স্পর্শের অর্থ না বুঝেই কোচিংয়ে যাতায়াত চালিয়ে যান। অন্যদিকে লম্পট শিক্ষক সুযোগ খুঁজতে থাকেন মীমের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ার। ২৭ ফেব্রুয়ারি ক্লাস শেষে বাসায় ফেরার আগে লাইব্রেরিয়ান মিল্লাদ স্কুল কমিটির নির্বাচনে ভোটার হওয়ার জন্য বাবা অথবা মায়ের নাম দিতে বলেন মীমকে। প্রতি উত্তরে মীম জানান, বাসায় গিয়ে বাবা-মার সাথে আলাপ করে জানাবেন, কে ভোটার হবেন। মীমের বাড়ির মালিক মাজেদা জানান, পরবর্তী দিন (২৮ ফেব্রুয়ারি,বৃহস্পতিবার) সকালেই অভিযুক্ত শিক্ষক তার মুঠোফোনে মীমকে স্কুলে আসার জন্য খবর পাঠান। পরবর্তীতে মীমের ভাই রাকিব লাইব্রেরিয়ান মিল্লাদকে তার ব্যবহৃত (০১৭২১-৯৮০৩৩৫) গ্রামীণ নম্বরে কথা বলে ভোটার তালিকায় বাবার নাম প্রস্তাব করেন। কিন্তু লম্পট শিক্ষক মিল্লাদ তাতে নারাজ। তিনি কৌশলে মীমকে বিকাল ৪ ঘটিকায় স্কুলে পাঠাতে বলেন।
কিশোরী মীম জানান, স্কুলে গিয়ে দপ্তরি রিনা বেগম এবং একজন শিক্ষিকাকে প্রশাধি সরকারকে দেখতে পেয়ে কথিত গণিতের শিক্ষক মিল্লাদের অবস্থান জানতে চান।গাজীপুরের গাছা থানা,জেলা প্রশাসক এবং স্কুল কমিটির সভাপতির কাছে দেয়া মীমের বাবার অভিযোগ থেকে জানাজায়, ‘গাছা উচ্চবিদ্যালয়’র লাইব্রেরী কক্ষে মীমকে আটকে ধর্ষণ চেষ্টা করেন লম্পট মিল্লাদ। কিশোরী মিল্লাদ দৌড়ে স্কুল থেকে পালিয়ে এ যাত্রায় রক্ষা পান।উক্ত ঘটনায় স্কুল কমিটির সভাপতি জনাব রাশেদুজ্জামান জুয়েল মণ্ডলের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিলে এই ঘটনায় তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার আগেই অভিযুক্ত লাইব্রেরিয়ান স্কুলে যোগদান করে দৈনিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।গাছা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক জনাব হারুনুর রশিদ অভিযুক্ত লাইব্রেরিয়ান মিল্লাদের পক্ষ নিয়ে জানান, মেয়েটিকে দিয়ে স্কুল কমিটির সভাপতি ও অভিভাবক সদস্য আমজাদ হোসেন চক্রান্ত করছেন। তবে আমাদের কাছে আসা মিল্লাদ ও মীমের ভাই রাকিবের কথোপকথন বলছে উদ্দেশ্যে মূলক ভাবেই স্কুল ছুটির পর মেয়েটিকে ডেকে পাঠান।’গাছা উচ্চবিদ্যালয়’র সভাপতি রাশেদুজ্জামান জুয়েল মণ্ডল জানান, ঘটনা জানাজানি হওয়ার আগেই অভিযুক্ত লাইব্রেরিয়ান আমার অফিস কক্ষে পরিবার নিয়ে হাজির হয়ে ক্ষমা চাইতে শুরু করেন। যা আমার সিসিটিভি ক্যামেরায় রেকর্ড আছে।তবে অভিযুক্ত মিল্লাদ দাবী করেন এই ঘটনার সাথে তিনি জড়িত না। ফোনে ডেকে আনার বিষয়টিও তিনি চেপে যান এবং নিজের পক্ষে সাফাই গাইতে থাকেন।
Authorized ।। sangbadporto.com