নিজস্ব প্রতিনিধিঃ রাজধানীর উত্তরায় যানজট নিরসনে ফুটপাত দখল করে অবৈধ ভাবে গড়ে উঠা ভাসমান দোকানপাট উচ্ছেদে একযোগে অভিযান চালিয়েছে ডিএমপি’র ট্রাফিক পুলিশের উত্তরা বিভাগ।এতে দুই শতাধিক দোকানপাট উচ্ছেদ ও প্রায় অর্ধ শতাধিক ভ্যান ডাম্পিং ও প্রায় ৩০টি ভ্যান রেকারিং করা হয়েছে।উত্তরার জসিমউদ্দিন,আজমপুর ও রাজলক্ষ্মী এলাকায় সোমবার (১৩ মে) সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।অভিযানকালে ট্রাফিক পুলিশকে থানা পুলিশ ও ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন সহযোগীতা করে।
অভিযানকালে জসিমউদ্দিন থেকে ১ ও ৩ নং সেক্টরের পাকার মাথা,আজমপুর থেকে ৩ ও ৭ নং সেক্টরের সাঙ্গাম মোড় ও হাউজবিল্ডিং থেকে ৭ ও ৯ নং সেক্টরের উত্তরা আধুনিক মেডিকেল পর্যন্ত সড়কের ফুটপাতে গড়ে উঠা টোং দোকান,ভ্যানে কাঁচামালের দোকান,কাপড়ের দোকান, জুতার দোকান’সহ বিভিন্ন দোকানী উচ্ছেদ করা হয়েছে।এতে ট্রাফিক পুলিশের রেকার গাড়ি ও সিটি কর্পোরেশনের ময়লার গাড়ি সহযোগীতা নেওয়া হয়।তবে উচ্ছেদ অভিযানকে কেন্দ্র করে কোন ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
এতে ডিএমপির ট্রাফিক পুলিশের উত্তর বিভাগের বিমানবন্দর জোনের সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার(এসি) সাখাওয়াত হোসেন সেন্টু, উত্তরা পূর্ব জোনের সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) মো.ইব্রাহিম,টিআই (ট্রাফিক ইন্সপেক্টর) ইউনুস মিয়া আখন্দ,টিআই মাসুম খান, টিআই কাজী মিজান’সহ অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।অভিযান প্রসঙ্গে জসিমউদ্দিন ট্রাফিক বক্সের টিআই ইউনুস মিয়া আখন্দ বলেন,’জসিমউদ্দিন মোড় থেকে পাকার মাথা পর্যন্ত এলাকায় ফুটপাত দখল করে ভাসমান দোকান উচ্ছেদে দুপুর ২টায় শুরু হয়ে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চলছে।এতে প্রায় দেড় শতাধিক ফুটপাতের দোকান উচ্ছেদ করা হয়।এসব দোকানের মধ্যে ফলের দোকান,চায়ের দোকান,ভাসমান ভ্যান ছিল।
টিআই ইউনুস বলেন,ট্রাফিক উত্তর বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) নাবিদ কামাল শৈবাল (অতিরিক্ত ডিআইজি পদোন্নতিপ্রাপ্ত) নির্দেশনায় এসি সাখাওয়াত হোসেন সেন্টু স্যারের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।এতে থানা পুলিশও সহযোগীতা করে।তিনি বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে এসব দোকানপাটগুলো দ্রুত সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দেয়া হয়।পরে অবশিষ্ট ভাঙারি অংশ সিটি কর্পোরেশনের ময়লার গাড়ি দিয়ে সরিয়ে রাস্তার ফুটপাত পরিষ্কার করা হয়।
আজমপুর ট্রাফিক পুলিশ বক্সের টিআই মাসুম খান বলেন,আজমপুর,বরীন্দ্র স্মরণী,কাবাব ফ্যাক্টরি ও ৭ নং সেক্টর ব্রীজের মিনিমল পর্যন্ত ফুটপাত দখল করে অবৈধভাবে গড়ে উঠা দোকানের ১৮টি দোকান ডাম্পিং করা হয়েছে।এসময় কিছু মোটর সাইকেল ও প্রাইভেটকারের বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে।এসব ফুটপাতের দোকানের মধ্যে অধিকাংশ কাপড়ের দোকান ও কাঁচামালের দোকান ছিল।এছাড়াও বেশ কিছু দোকানপাট উচ্ছেদ করা হয়েছে।অভিযানটি সকাল থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত চলেছে।অপরদিকে হাউজবিল্ডিং ট্রাফিক পুলিশ বক্সের টিআই কাজী মিজান বলেন,হাউজবিল্ডিং থেকে সোনারগাঁও জনপথ সড়কের উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পর্যন্ত ও হাসপাতালের পাশের সড়কের অবৈধভাবে গড়ে উঠা ফুটপাতের প্রায় ৩০টি দোকান উচ্ছেদ করা হয়েছে।এসময় ফুটপাতে ভ্যানে করে মালামাল বিক্রির অভিযোগে চারটি ভ্যান আটক করে রেকার বিল করা হয়েছে।অভিযানটি দুপুর ১টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত চলেছে।
এছাড়াও ট্রাফিক পুলিশের উত্তরা পূর্ব জোনের সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) মো. ইব্রাহিম বলেন,আমাদের উত্তরা পূর্ব জোনের স্থায়ী কোন ফুটপাত নাই।কিছু কিছু মোভিং ভ্যান আছে।এগুলো বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জায়গায় থাকে।তারা হুটহাট করে সড়কের ফুটপাতে চলে আসে। পরে অভিযান চালিয়ে আজমপুর থেকে ২২/২৫টি ভ্যান ডাম্পিং করেছি,হাউজবিল্ডিংয়ে ৪টি ভ্যান রেকার বিল করা হয়েছে।অভিযানটি সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত পরিচালনা করা হয়েছে।
একের পর এক উচ্ছেদের পর ফুটপাত কারা দখল করে-জানতে চাইলে এসি ইব্রাহিম বলেন,এক সময় কারো কারো নিয়ন্ত্রণে ছিল।এখন কারো নিয়ন্ত্রণে নাই।যারা আগে থেকে ব্যবসা করতো,তারাই ফুটপাতে দোকান বসায়।এত অভিযানের পরও ফুটপাত দখলমুক্ত না হওয়ার কারণ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পুলিশ কর্মকর্তা এসি ইব্রাহিম বলেন,আব্দুল্লাহপুর বেইলি ব্রীজের সামনে এক সময় ফুটপাত বসতো।আমরা একদম পরিষ্কার করে দিয়েছি।এখন আমরা বলতে পারি উত্তরা পূর্ব জোনে ফুটপাত নিয়ন্ত্রণে।এখন নির্দিষ্টভাবে কোথাও ফুটপাত বসে না।তবে ভ্যানে করে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে,চলে আসে।
এদিকে অভিযান অংশ নেওয়া পুলিশ কর্মকর্তারা বলেন,ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান স্যারের নির্দেশে এসব উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।স্যার আবার নিজেও বিভিন্ন মাধ্যমে নজরদারি করছেন।এবার থেকে ফুটপাত দখল করে অবৈধ দোকানপাট বসানোর কোন সুযোগ নাই।বসালেই ট্রাফিক পুলিশ ও থানা পুলিশ সমন্বয় করে ব্যবস্থা নিবে।
Authorized ।। mizanur rahman