সৃজনশীল কর্মের মাধ্যমে ধর্মের অপব্যবহারী দুর্বৃত্তদের প্রতিরোধ করতে সংস্কৃতিকর্মীদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এমপি।মন্ত্রী গত রাতে রাজধানীর বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে সরকারি অনুদানে নির্মিত প্রামাণ্য চলচ্চিত্র ‘দ্যা লক্ষণ দাস সার্কাস’এর প্রিমিয়ার শো উদ্বোধন উপলক্ষ্যে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তৃতা করেন সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি।
মোজাম্মেল হক বলেন,সরকার বিরোধী পাকিস্তানপ্রেমী মৌলবাদীরা পাকিস্তান আমলে ধর্ম গেল গেল বলে ২৩ বছর যে ধুয়া তুলেছিল,সে গোষ্ঠীর একটি অংশ এখনো সক্রিয় রয়ে গেছে।তাদের জবাব দেয়ার অন্যতম মোক্ষম হাতিয়ার হতে পারে সার্কাস,নাটক,চলচ্চিত্রসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড।
এ সময় স্মৃতিচারণ করে মন্ত্রী বলেন,চিত্তবিনোদনের জন্য খুব জনপ্রিয় মাধ্যম ছিলো সার্কাস।আজ থেকে প্রায় ৭০ বছর আগে আমি চতুর্থ শ্রেণিতে থাকাকালীন প্রথম সার্কাস দেখি।তারপর প্রতিবছর নিয়মিত সার্কাস দেখতাম।তখন গাজীপুরে রথযাত্রা উপলক্ষ্যে নিয়মিত সার্কাস প্রদর্শন করা হতো।কিন্তু কালের পরিক্রমায় সে সার্কাস আজ অনেকটাই হারিয়ে গেছে।
সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেন,চলচ্চিত্র যদিও তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন,তথাপি সংস্কৃতির উপাদান হিসাবে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণে সরকারি অনুদান দেয়া শুরু করেছে।অনুদানের পরিমাণও তুলনামূলক বেশি।ইতোমধ্যে জাতির পিতার জ্যেষ্ঠ পুত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামাল ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবকে নিয়ে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অনুদানে প্রামাণ্যচিত্র নির্মিত হয়েছে।
স্মৃতিচারণ করে কে এম খালিদ বলেন,আমাদের ছোটবেলায় কমলা সার্কাসের খুব নামডাক ছিলো।সার্কাস শিল্পীদের বিভিন্ন ধরনের কসরত,তারের উপর দিয়ে হেঁটে যাওয়া,হাতি,বাঘ দেখে খুব আনন্দ উপভোগ করতাম।পরবর্তীতে মৌলবাদীদের উৎপাতে সার্কাস অনেকটাই বন্ধ হয়ে গেছে।সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী বলেন,সার্কাস নিয়ে নির্মিত প্রামাণ্যচিত্রটি হতে পারে এ শিল্পকে পুনরুজ্জীবনের একটি প্রধান অস্ত্র।মহান সার্কাস শিল্পী লক্ষণ দাসের জীবনকাহিনী নিয়ে মূলতঃ প্রামাণ্যচিত্রটি নির্মিত হয়েছে। লক্ষণ দাস মহান মুক্তিযুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের বিভিন্নভাবে সাহায্য-সহযোগিতা করেন।কিন্তু পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী শুধু তাকেই হত্যা করেনি,বুলেটের আঘাতে ক্ষত-বিক্ষত করে তার আদরের হাতিটাকেও।
খ্যাতিমান নাট্যজন অনন্ত হীরার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট চলচ্চিত্র নির্মাতা মানজারে হাসীন মুরাদ। শুভেচ্ছা বক্তৃতা করেন জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউট এর মহাপরিচালক শাহিন ইসলাম এনডিসি,বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ এর মহাপরিচালক মো.নিজামুল কবীর ও সূর্য দীঘল বাড়ি খ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা মসিহ উদ্দিন শাকের।অনুভূতি ব্যক্ত করেন’দ্যা লক্ষণ দাস সার্কাস’ প্রামাণ্য চলচ্চিত্রের প্রযোজক ও পরিচালক ঝুমুর আসমা জুঁই।অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরী।
Authorized ।। mizanur rahman