সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি বলেছেন,বঙ্গবন্ধুর ব্যবহৃত স্মৃতি নিদর্শন সমূহ জাতির অমূল্য সম্পদ।অর্থমূল্য দিয়ে এর পরিমাপ করা যাবে না।আবার নতুন করে এটি সৃষ্টিও করা যাবে না।আমরা আধুনিক ও বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতিতে নিদর্শন সমূহকে সংরক্ষণ করতে চাই যেন হাজার বছর পরেও এটি অবিকল ও অবিকৃত থাকে।প্রতিমন্ত্রী আজ বিকালে রাজধানীর বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর এর কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে বঙ্গবন্ধুর ব্যবহৃত ৪টি অমূল্য স্মৃতি নিদর্শন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর কর্তৃক বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরকে হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর পর্ষদ এর সভাপতি অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ আবুল মনসুর।অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তৃতা করেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর এর কিউরেটর সাবেক সচিব মো.নজরুল ইসলাম খান ও সহকারী কিউরেটর কাজী আফরিন জাহান।স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর এর মহাপরিচালক মোঃ কামরুজ্জামান।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে স্মৃতি নিদর্শনসমূহ হস্তান্তর করেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর এর কিউরেটর মো. নজরুল ইসলাম খান।জাতীয় জাদুঘর এর পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধুর ব্যবহৃত ৪টি স্মৃতি নিদর্শন যথাক্রমে মুজিব কোট,টোব্যাকো পাইপ,পাঞ্জাবি ও পায়জামা গ্রহণ করেন যথাক্রমে সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি,সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ আবুল মনসুর,জাতীয় জাদুঘর পর্ষদ এর সভাপতি অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক ও বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর এর মহাপরিচালক মো.কামরুজ্জামান।জাতির পিতার ব্যবহৃত জিনিস ও নিদর্শন সমূহ দিয়ে জাতীয় জাদুঘরে আলাদা গ্যালারি প্রতিষ্ঠা করা হবে উল্লেখ করে প্রধান অতিথি সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী বলেন,১৯৭২ সালে জাতির পিতা বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরকে তাঁর ব্যক্তিগত সংগ্রহ থেকে ৪৯টি নিদর্শন উপহার দেন।যার মধ্যে ছিল মানপত্র,কাঁসার থালাসহ আরো কিছু জিনিসপত্র।পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধুর ব্যবহৃত সাইকেল,কলম,স্বহস্তে লিখিত ও স্বাক্ষরিত পত্র,বিভিন্ন সূচিকর্ম ও চিত্রকর্ম জাদুঘর কর্তৃক সংগৃহীত হয়েছে।কে এম খালিদ বলেন,আমরা জাদুঘরের জন্য একটি বাস পেয়েছি যেটি দিয়ে ঢাকা ও ঢাকার বাইরের ছাত্র-ছাত্রীসহ দর্শনার্থীদের জাদুঘর পরিদর্শনের ব্যবস্থা করা হবে যার মধ্য দিয়ে তাদের সামনে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধসহ জাতির সঠিক ইতিহাস তুলে ধরা হবে।
সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী বলেন,আগস্ট শোকের মাস।এ মাসে যখন বঙ্গবন্ধুর ব্যবহৃত জিনিস স্পর্শ করি,তখন সারা শরীরে কম্পন অনুভব করি,গভীর শোকে বেদনার্ত হই।প্রতিমন্ত্রী এসময় দ্রুততম সময়ের মধ্যে নিদর্শনসমূহ জাতীয় জাদুঘরে হস্তান্তরের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ আবুল মনসুর বলেন,বঙ্গবন্ধুর ব্যবহৃত ব্যক্তিগত স্মৃতি নিদর্শনসমূহ সংগ্রহ জাতীয় জাদুঘরের জন্য মাইলফলক হয়ে থাকবে।এর মাধ্যমে জাদুঘরের দর্শনার্থীবৃন্দ বিশেষ করে নতুন প্রজন্ম বাঙালি জাতির জন্য বঙ্গবন্ধুর ত্যাগ-তিতিক্ষা ও মাহাত্ম্য সম্পর্কে আরো বিশদভাবে জানতে পারবে।বঙ্গবন্ধু জাদুঘর এর কিউরেটর মো. নজরুল ইসলাম খান বলেন,জাতীয় জাদুঘর এর দর্শনার্থীর সংখ্যা অনেক বেশি এবং হস্তান্তরকৃত নিদর্শনসমূহের একাধিক কপি বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে রয়েছে বিধায় সেগুলো জাতীয় জাদুঘরে হস্তান্তর করা হয়েছে।তিনি বলেন,বঙ্গবন্ধু পরিবারের আরো অনেক স্মৃতি নিদর্শন বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে রয়েছে যেগুলো মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন সাপেক্ষে জাতীয় জাদুঘরে হস্তান্তর করা যেতে পারে।
জাতীয় জাদুঘর পর্ষদ এর সভাপতি অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন,বঙ্গবন্ধুর অবদানের কথা বলে শেষ করা যাবে না। বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি নিদর্শন কেবল সংগ্রহ করলেই হবে না,এর মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি ধরে রেখে তাঁকে অনুসরণ করতে হবে।
উল্লেখ্য,বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর এর মহাপরিচালক মোঃ কামরুজ্জামান গত ২৬ জুলাই ২০২২ তারিখে বঙ্গবন্ধু জাদুঘরকে হস্তান্তরকৃত স্মৃতি নিদর্শন সমূহের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে চিঠি দেন এবং ১০ আগস্ট ২০২২ তারিখে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ট্রাস্টের সভায় জাতীয় জাদুঘরের প্রস্তাব সাদরে গৃহীত হয়।