ডেস্ক রিপোর্টঃসংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি বলেছেন, রবীন্দ্রনাথ তাঁর ‘সভ্যতার সংকট’ প্রবন্ধে জাতির সংকট মোচনে এক মহামানবের আগমন প্রত্যাশা করেছিলেন। সেই প্রত্যাশিত মহামানবই আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু। বাঙালি তথা উপমহাদেশের ক্রান্তিলগ্নে সেই মহামানবের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। গভীর অধ্যাত্মবিশ্বাসী এ দুই মহাপুরুষের চিন্তাভাবনা ও কর্মকাণ্ডে বাংলা ভাষা ও বাঙালির প্রতি ছিল অপরিসীম প্রেম।প্রতিমন্ত্রী আজ বিকালে রাজধানীর বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর এর কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬১তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর আয়োজিত সেমিনার ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।প্রধান অতিথি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর দুজনেই বাংলা ও বাঙালিকে বিশ্বের দরবারে সুমহান মর্যাদায় হাজির করেছেন- একজন রাজনীতি দিয়ে, অন্যজন সাহিত্য দিয়ে। ‘বাঙালি’ বলে যে জাতির কথা রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন, বঙ্গবন্ধু সেই জাতিকেই আবিষ্কার করেন ‘সোনার বাংলায়’। সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী বলেন, যে বাংলাকে ভালোবেসে রবীন্দ্রনাথ লিখলেন, ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি,’ আর বঙ্গবন্ধু সেটিকে ভালোবেসে ১৯৭২ সালের ১৩ জানুয়ারি মন্ত্রিসভার বৈঠকে জাতীয় সংগীতে রূপ দিলেন।
বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর এর বোর্ড অব ট্রাস্টিজ এর সভাপতি অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক এর সভাপতিত্ব অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ আবুল মনসুর। সেমিনারে ‘রবীন্দ্রনাথের শিক্ষা দর্শন’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রবীন্দ্র সৃজনকলা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৈয়দ মোহাম্মদ শাহেদ। আলোচনা করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রফেসর ও সাবেক তথ্য কমিশনার ড. খুরশীদা বেগম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর এর মহাপরিচালক খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান এনডিসি।সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, বঙ্গবন্ধু রবীন্দ্রনাথের দর্শনকে হৃদয়ে ধারণ করতেন। ১৯৬৬ সালের ছয়দফার কাউন্সিল অধিবেশন তিনি শুরু করেন ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি’ দিয়ে। তখনই তিনি রবীন্দ্রনাথের এ গানটি ভবিষ্যৎ স্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত হিসাবে মনে মনে স্থির করেন। তিনি বলেন, রবীন্দ্রনাথ আনন্দের সঙ্গে শিক্ষাকে গুরুত্ব দিয়েছেন। সেজন্য আমাদের নতুন প্রজন্মকে শিক্ষা দিতে হবে আনন্দঘন পরিবেশে। ড. আরেফিন সিদ্দিক আরো বলেন, লেখাপড়ার সর্বোচ্চ পর্যায় হচ্ছে মনুষ্যত্বের বিকাশ ঘটানো। আমাদের সেটিকে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করতে হবে। এসময় তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, আমরা ভালো ডাক্তার, প্রকৌশলী, আমলা, বিজ্ঞানী হচ্ছি- ভালো মানুষ কি হচ্ছি?
অনুষ্ঠানে রবীন্দ্র সংগীত পরিবেশন করেন বিশিষ্ট রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী অনিমা রায়।